ভারতের ব্যর্থ চন্দ্রাভিযানের প্রশংসায় পাক নারী মহাকাশচারী
এ মুহূর্তে ভারতের সবকটি প্রধান সারির দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের শিরোনামে রয়েছে দেশটির চন্দ্রযান-২। প্রায় হাজার কোটি টাকা খরচ করে পাঠানো বিক্রম ল্যান্ডারের অস্তিত্ব খুঁজতে মরিয়া ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)।
শনিবার ভোররাতে চাঁদে দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানোর কথা ছিল ভারতের চন্দ্রযান-২-এর। চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করলেই, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীনের পরেই ভারতের স্থান হতো। পাশাপাশি প্রথমবারেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণের রেকর্ডও দখলে আসত ভারতের।
এখন পর্যন্ত ব্যর্থ ভারতের এ মহাকাশ মিশন নিয়ে ইতিমধ্যে ব্যঙ্গ করেছেন কয়েকজন পাকমন্ত্রী। চন্দ্রযান-২–কে খেলনার সঙ্গে তুলনা করে পাকিস্তানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছিলেন, চাঁদের বদলে মুম্বাইয়ে নেমেছে চন্দ্রযান-২।
তবে এবার কটাক্ষ নয়, প্রশংসাবাণী এলো পাকিস্তান থেকে। ভারতের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানালেন পাকিস্তানের প্রথম নারী মহাকাশচারী নামিরা সালিম।
ইসরোকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নামিরা সালিম বলেন, শেষ মুহূর্তে বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে ইসরোর নিয়ন্ত্রণকক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও আমি মনে করি ইসরো ব্যর্থ হয়নি, অনেকাংশে সফল। ইসরোর এ অভিযান ঐতিহাসিক একটি পদক্ষেপ। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এ মিশন ১০০ ভাগ সফল হলে শুধু দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া নয়, পুরো বিশ্ব উপকৃত হত।
তিনি আরও বলেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ইসরোর অভিযানের চেষ্টা সত্যি প্রশংসনীয়। ইতিমধ্যে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) ইসরোর প্রশংসা করেছে। ইসরোর সঙ্গে তারা কাজও করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে ইসরো ব্যর্থ হয়েছে তা বলা ঠিক নয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় চন্দ্রযান-২। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় এক মিনিটের মধ্যে সেটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়। কিন্তু শুক্রবার রাতে চাঁদের পিঠে অবতরণের আগেই চন্দ্রযান-২ এর বিক্রম ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ইসরোর।
চূড়ান্ত অবতরণের আগে ওই রোবোটিক গবেষণা যানটি চন্দ্রপৃষ্ঠে আছড়ে পড়েছে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। তবে বিক্রম ল্যান্ডার খুঁজে পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন ইসরোপ্রধান কে শিবন।
তিনি জানান, এটি চাঁদের পৃষ্ঠে অবস্থান করছে। এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত ২০০৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম নারী মহাকাশচারী নামিরা সালিম এভারেস্টে স্কাই ডাইভ করেছিলেন। তিনি বর্তমানে মরক্কোয় থাকছেন। এভারেস্ট স্কাই ডাইভ করা প্রথম এশীয় নারীও তিনি।
পাঁচ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিন গ্যালাকটিকের স্পেসশিপটু নামের একটি বেসরকারি মহাকাশযানের প্রকল্পে কাজ করেছেন নামিরা সালিম।