ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে কোন খাতে কত টাকা ফি জানানোর নির্দেশ
বিদেশি পাঠ্যক্রমে পরিচালিত ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন খাতে কত টাকা ফি আদায় করছে, তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণী অভিভাবকদের লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং এই নয়টি বোর্ডের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অঞ্চলের উপ-পরিচালকদের চিঠি দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
এ বিভাগের অতিরিক্ত-সচিব (মাধ্যমিক) মোমিনুর রশিদ আমিন বুধবার গনমাধ্যমকে বলেন, ইংরেজি মাধ্যমের অনেক বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন নেই, সেগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতেই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
“যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত হতে হবে। আইন অনুসারে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আর রেজিস্ট্রেশন করার সময় তাদের বিভিন্ন ধরনের ফি কত সেটা অভিভাবকদের জানাতে হয়। কিন্তু এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের ফি নিয়ে মাঝে মাঝে অভিযোগ পাওয়া যায়।”
‘বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত বেসরকারি বিদ্যালয়ের নিবন্ধন নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত’ শিরোনামের ওই চিঠিতে বিদেশি কারিকুলামে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ইংরেজি মাধ্যমের পাঠ্যসূচি পরিচালিত ‘বেসরকারি বিদ্যালয় নিবন্ধন বিধিমালা, ২০১৭’ এর ১৯ (৩) ধারাটি মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ফাইল ছবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ফাইল ছবি “বেসরকারি বিদ্যালয়ে সহপাঠ কার্যক্রম পরিচালনা, কোনো বিশেষ সুবিধা এবং উন্নতমানের যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি সুবিধা ব্যবহারের জন্য ছাত্রছাত্রীদের নিকট হতে ফি আদায় করা যাবে, তবে অনুরূপ ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত তার পূর্ণাঙ্গ ব্যয় বিবরণী অভিভাবকদের লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।”
চিঠিতে বলা হয়েছে, সাময়িক নিবন্ধন আবেদন ফরমে প্রতি মাসে বা বছরে শ্রেণিভেদে আদায় করা টিউশন ফি, ভর্তি ফি, খেলাধুলা ফি, গ্রন্থাগার ফি, টিফিন ফি, মুদ্রণ ফি এবং অন্যান্য ফি এর পরিমাণ ও বিবরণী উল্লেখ করার নিয়ম আছে।
“এ অবস্থায় বিদেশি কারিকুলামে পরিচালিত বেসরকারি বিদ্যালয় নিবন্ধন বিধিমালার বিধি ১৯ (৩) বাস্তবায়নের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং এই নয়টি বোর্ডের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অঞ্চলের উপ-পরিচালকদের অনুরোধ করা হয়েছে।”
এ ধরনের নিবন্ধিত এবং নিবন্ধনহীন কতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে তার একটি তালিকাও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে ওই চিঠিতে।
বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্যারেন্টস ফোরামের আহ্ববায়ক এ কে এম আশরাফুল হক বলেন, ইংরেজি মাধ্যমের কোনো প্রতিষ্ঠানই তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব অভিভাবকদের জানায় না।
“এটা আমাদের দাবির মধ্যেই আছে, আমরাও চাই কোন খাতে কত ফি নেওয়া হচ্ছে এবং কীভাবে তা খরচ করা হচ্ছে তা আমাদের জানানো হোক।”
ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষকে নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জি এম নিজাম উদ্দিন বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠানই আয়-ব্যয়ের হিসাব দেয় না। তবে কেউ কেউ বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব বিষয় তুলে ধরে।
“যদি স্কুলগুলো মনে করে এটা প্রকাশ করা অসুবিধার, তাহলে সরকারের সাথে বসতে হবে। আর যদি সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় না আসা যায়, তাহলে সরকারের যে সিদ্ধান্ত তা তো পালন করতেই হবে।”
অনেক প্রতিষ্ঠানই আভ্যন্তরীণ বিষয় সবাইকে ‘জানাতে চায় না’ বলে মন্তব্য করেন নিজাম উদ্দিন।