নীলফামারীতে পানির দামে বিক্রি হচ্ছে চামড়া: গরু ১০০-১২০, ছাগল ৫-১০ টাকা
নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারী জেলার শহর এবং গ্রামাঞ্চলে ঘুর ঘুরে কম মূল্যে চামড়া কিনেও বিক্রি করতে গিয়ে লোকসান হওয়ার দাবি করেছেন মৌসুমী ব্যাবসায়ীরা। গরুর চামড়া ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা ও ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ৫ টাকায়। কোরবানির চামড়া নিয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন হতদরিদ্র, এতিমখানা এবং বিভিন্ন মাদ্রাসা অসহায় শিক্ষার্থীরা । কেননা কোরনবানি ঈদে চামড়া বিক্রির টাকা দিয়ে তাদের কিছুটা উপকার হয়ে থাকে। কিন্তু এবার দাম নেই, ক্রেতাও নেই। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে বড় গরুর চামড়া ২০০ টাকা ও ছোট গরুর চামড়া মাত্র ১০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। ছাগলের চামড়া কেনা-বেচা হয়েছে মাত্র ১০ থেকে ১৫ টাকায়।
জেলা সদরের ডাক বাংলো এলাকার মো.ইলিয়াস বলেন, তিনজন মিলে ৭৫ হাজার টাকার গরু কোরবানি দিয়েছিলাম। চামড়া বিক্রি করেছি মাত্র ৩শ টাকায়। চামড়ার মুল্য পানির দরে হওয়ায় অনেকে চামড়া এতিম খানায় দান করেছেন।
সৈয়দপুর উপজেলার ওয়াপদা নয়াহাট এলাকার বক্কর নামের একজন বলেন, ১২ হাজার টাকায় ছাগল কিনে কোরবানি করেছি। চামড়া দাম বলছে মাত্র ৫ টাকা। তাই বিক্রি না করে মাটিতে পুতে ফেলেছি।
ডোমার উপজেলার ব্যবসায়ী এনামুল চৌধুরী জানান , এক লাখ ৫ হাজার টাকার গরুর চামড়া যদি ২০০ টাকা বলে তাহলে কেমন লাগে বলেন, সরকার যে দাম করে দিয়েছে সেই অনুযায়ী এই চামড়ার দাম হয় সর্বনিম্ন এক হাজার ৩০০ টাকা। তাহলে এত কম দামে কেন চামড়া বিক্রি করব? এই কারণে এতিমখানায় চামড়া দিয়ে দিয়েছি। ছাত্ররা এসে নিয়ে গেছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের মো.আজিজার ইসলাম বলেন, আগে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনার জন্য আসত। চামড়া নেয়ার জন্য কাড়াকাড়ি করত। গত দুই বছর যাবত চামড়া ব্যবসায় তাদের লোকসান গুনতে হয়েছে। ফলে চামড়া বিক্রির জন্য কোন লোক পাইনি। মসজিদের হুজুরের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে মাদরাসায় ফোন দিলাম। তারা এসে নিয়ে গেছে। চামড়া গরিবের হক। এতিমখানায় গরিব ছেলে পড়া লেখা করে তাদের জন্যই দান করে দিলাম।
এবছরও চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় আলেম সমাজ ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা অনেকে বিভিন্ন পরিবহনে করে চামড়া সংগ্রহ করে পাইকারি বাজারে নিয়ে বিক্রি করার সময় দাম দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এতে যানবাহনের ভাড়াও উঠছে না।