উজানের আসাম থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। হঠাৎ ফুঁসে উঠেছে যমুনা। তীব্র গতিতে পানি বাড়ছে। যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে বলে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নব কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন। জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ী ও জামালপুর সদরের একাংশের শতাধিক গ্রামে নতুন করে পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ।
বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বেশকটি সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা। মেলান্দহ-মাহমুদ সড়কসহ ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জের বেশকটি অভ্যন্তরীণ সড়ক এখন পানির তলে।
বন্যাকবলিত এলাকায় কোন কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের ও শ্রমজীবী মানুষেরা। দিন এনে দিন খাওয়া এসব লোকজন খাবার সংকটে ভুগছে। ৫ দিন ধরে পানিবন্দি থাকায় বানবাসীদের চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। ত্রাণের জন্য চারদিকে হাহাকার শুরু হয়েছে।
বন্যায় যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম, ঝিনাই ও সুবর্ণখালীসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ছে। বসতবাড়ি ছাড়াও বাজারঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় উঁচুস্থানে আশ্রয়ের সন্ধানে দ্বিগবিদিক ছুটাছুটি করছেন বানভাসিরা।
ইসলামপুরে বন্যাকবলিত ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। চারিদিকে পানি উঠায় শিশু ও বৃদ্ধরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। গো-খাদ্য সঙ্কটের মুখে গ্রহস্থালির গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বানভাসীরা।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও সরকারি অফিস-আদালতসহ পৌর এলাকা ও চুকাইবাড়ী, চিকাজানি, বাহাদুরাবাদ ও চর আমখাওয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী কুলকান্দি, বেলগাছা, চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, ইসলামপুর সদর, ইসলামপুর পৌরসভার একাংশ এবং মাদারগঞ্জের বালিঝুড়ি, জোড়খালি, মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া, কাজাইকাটা, রুখনাই বানিয়াবাড়ী শিরিঘাট, চারালদা ও চিনিতুলা, কুলিয়া ইউনিয়নের সাদিবাটি, বল্লবপুর, হামলাপাড়া ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা, আওনা, পোগলদিঘা, সাতপোয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বন্যার পানিতে ফসলি মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় বীজতলাসহ রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।