রাজশাহী বিভাগসারাদেশ

শেরপুর পৌরসভায় ভুয়া ভাউচারে এডিপির টাকা আত্মসাত

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে । প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ভুয়া বিল ভাউচার তৈরীর মাধ্যমে দরপত্র অনুযায়ী মালামাল ক্রয় না করেই প্রায় চার লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে। প্রকল্পের ঠিকাদার প্রীতম কনস্ট্রাকশনের সত্বাধিকারি আহসানুল হক এই অভিযোগ করেন। সেইসঙ্গে সরকারি টাকা আত্মসাতের ঘটনার বিচার দাবি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ একাধিক সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
ঠিকাদারের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরে বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানোর ফোকার মেশিন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিধনের স্প্রে মেশিন, পেট্রোল, ওষুধ, শ্রমিক ব্যয় ও খুচরা মালামাল কেনার জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে তিন লাখ নব্বই হাজার চারশত পচানব্বই টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী পৌরসভার পক্ষ থেকে দরপত্র আহবান করা হয়। বিগত ২০১৯সালের ১৫অক্টোবর পৌরসভার সেই দরপত্রে অংশ নেন প্রীতম কনস্ট্রাকশন। ওই টেন্ডারের আইডি নং-৩৬৯১৪৪।
পরে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে পৌরসভায় এডিপি প্রকল্পের সাপ্লাই/সরবরাহ করার জন্য নির্বাচন করা হয়। পাশাপাশি একই বছরের ১১ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এতে স্বাক্ষর করেন পৌরসভার টেন্ডার কমিটির নির্বাহী প্রকৌশলী (ইনচার্জ) শফিকুল ইসলাম। কিন্তু দরপত্রের কার্যাদেশ পাওয়ার পর থেকে সেই অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ করতে চাইলে নিচ্ছেন না। দীর্ঘদিন থেকে এসব মালামাল গ্রহণে তালবাহানা করছেন পৌরসভর সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা।
প্রীতম কনস্ট্রাকশনের সত্ত্বাধিকারি আহসানুল হক বলেন, তিনি কিছুই না জানলেও তার প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে টেন্ডার কমিটির সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা মালামাল না কিনেই ভুয়া বিল ভাউচার তৈরীর মাধ্যমে প্রকল্পের উক্ত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। তাই দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী কেনা মালামাল গ্রহণ করছেন না।
পরে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পৌরসভায় খোঁজ নিতে গেলে পৌর সচিব ইমরোজ মুজিব ও হিসাব রক্ষক রেজাউল করিম তার প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। এছাড়া তার স্বাক্ষর ছাড়াই মালামাল না কিনে ভুয়া বিল ভাউচার তৈরীর মাধ্যমে এহেন কাজটি করা হয়েছে বলেও তাকে জানানো হয়। তাই সরকারি টাকা আত্মসাতসহ এই দুর্নীতির বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
শেরপুর পৌরসভার সচিব ইমরোজ মুজিব এ প্রসঙ্গে বলেন, টেন্ডার ও মালামাল গ্রহণের বিষয়টি ইঞ্জিনিয়ার সেকশন ও স্টোর রক্ষক বলতে পারবেন। তবে এডিপির ওই প্রকল্পের মালামাল কেনার বিল দেওয়া হয়েছে। পৌরসভার হিসাব রক্ষক রেজাউল করিম একই মন্তব্য করে এ প্রসঙ্গে বলেন, মালামাল কেনা হয়েছে কী-না তা বলতে পারবো না। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
শেরপুর পৌরসভার প্রকৌশলী শামিম আহমেদ বলেন, এই ধরণের কোন লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানা নেই। তাই বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছি না।
শেরপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুস সাত্তার বলেন, নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার পর থেকেই পৌরসভায় যাওয়া হয়নি। তাই লিখিত অভিযোগের বিষয়টি জানা নেই। এরপরও বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন বলে জানান। পাশাপাশি কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি করেনে তিনি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button