বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

৪ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের লোগোর ইতিহাস

মাইক্রোসফট, অ্যাপল, ইয়াহু, গুগলসহ বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের লোগো দিয়েই বিশ্বের মানুষের সঙ্গে পরিচিত। তবে এসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর লোগোগুলোর পেছনেও রয়েছে মজার ইতিহাস। এরকম ৪টি লোগোর বিস্তারিত নিয়ে এই লেখা।

মাইক্রোসফট

টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট তাদের যাত্রা শুরু করে ১৯৭৫ সালে। এরপর থেকেই প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এক নাম মাইক্রোসফট। যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মাইক্রোসফট চারবার তাদের লোগো পরিবর্তন করেছে। সত্তর এবং আশির দশককে বলা হয়েছে থাকে ডিসকো যুগ। মাইক্রোসফটের প্রথম লোগোতেই সেই সময়ের ছাপ রয়েছে। দুই লাইনের এই লোগোতে উপরে ‘মাইক্রো’ এবং নিচে ‘সফট’ লেখা হয়েছে। তাদের দ্বিতীয় লোগোটি পুরো নামটি একসাথে লিখে দেয় তারা। বড় হাতের অক্ষরে লেখা সবগুলো অক্ষরের মধ্যে মাইক্রো অংশের ‘O’ অক্ষরটিকে তারা ডিজাইন করে লাইন দিয়ে এবং এই লোগোকে বলা হয় বিবেট লোগো। প্যাকম্যাান নামের এই লোগোটি ডিজাইন করে স্কট বেকার। এই লোগোটিই মাইক্রোসফট ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে। তবে এর মাঝে কয়েকবার তারা ট্যাগলাইন যোগ করে এবং পরিবর্তন করে এই লোগোর সাথে। এরপর তারা তাদের নামের সাথে যোগ করে চার রঙের একটি প্রতীক। তাদের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের লোগোতে যে চারটি রঙ রয়েছে, তা ব্যবহার করে এই লোগোটি ডিজাইন করে।

অ্যাপল

টেক জায়ান্ট অ্যাপল’র লোগোটি তাদের নামের সাথে যেমন সঙ্গতিপূর্ণ, তেমনি এই লোগোটি দেখেই এক নজরে বলে দেওয়া যায় এটি অ্যাপল’রই লোগো। অ্যাপল’র প্রথম লোগোটি দেখে অনেকেই মদের বোতল ভেবে ভুল করে থাকতে পারেন। আর সাদা চোখে আপেলের সাথে এর সম্পর্ক না থাকলেও এতে পরোক্ষভাবেই জড়িয়ে ছিল আপেল। এই লোগোতে ছিল গাছতলায় বসে থাকা নিউটনের একটি প্রতিরূপ। পরে ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত লোগো হিসেবে অ্যাপল ব্যবহার করে ডানপাশে কামড়ে দেওয়া একটি আপেলকে। এটি আবার ছিল কয়েকটি রঙে রঙিন। রব জেনফের ডিজাইন করা এই লোগোর পেছনেও নানান গল্প প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে অ্যালান ট্যুরিং সম্পর্কিত। কম্পিউটিংয়ের অন্যতম পথিকৃত্ অ্যালান ট্যুরিং একটি সায়নায়েডযুক্ত আপেল খেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সেই ঘটনাকে মনে রেখেই এই ডিজাইনটি করেন রব জেনফ।

গুগল

অনলাইন জায়ান্ট গুগল’র লোগোটি বোধহয় সবচেয়ে বেশি দেখা লোগো। সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহূত গুগল’র লোগোটিও সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে। সের্গেই ব্রিন নিজেই ডিজাইন করেন গুগল’র প্রথম লোগোটি। মৌলিক রঙগুলো ব্যবহার করে গুগল শব্দটি লিখে ডিজাইন করা এই লোগোর সাথে ছিল একটি বিস্ময়সূচক চিহ্ন। ফন্ট বদলে পরের বছরেই তিন রঙের সাথে আরেকটি রঙ যুক্ত করে এবং বিস্ময়সূচক চিহ্নটি বাদ দিয়ে নতুন করে লোগো ডিজাইন করে গুগল। পরে ২০১০ সালে রুথ কেডার নতুন রঙে এবং নতুন ফন্টে ডিজাইন করেন গুগল’র লোগো।

ইয়াহু

‘জেরি অ্যান্ড ডেভিডস গাইড টু ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব’ নাম নিয়ে যাত্রা শুরু করে আজকের ইয়াহু। পরে তারা ইয়াহু নামেই পরিচিত হয়। শুরুতে তাদের লোগোটি ছিল লাল রঙের। আর ইয়াহু শব্দটির শেষে ছিল বিস্ময়সূচক চিহ্ন। প্রায় এক দশক পরে তারা লাল রঙের বদলে পার্পেল রঙ ব্যবহার করে লোগোটি বদলে দেয়। রঙের সঙ্গে সঙ্গে আগের লোগোতে যে ছায়া ছিল, তাও বাদ দেয় তারা। আর তাদের জনপ্রিয় ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজিং সার্ভিস ইয়াহু ম্যাসেঞ্জারের লোগো হিসেবে ব্যবহার করে কেবল ওয়াই (Y) অক্ষরটি এবং সাথে বিস্ময়সূচক চিহ্ন।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button