সৈয়দপুরে মুসলিম থেকে খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহনের সিদ্ধান্ত এক অসহায় বিধবার
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৪ বছর যাবৎ এক অসহায় বিধবার বাড়ির চলাচলের রাস্তা দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে তার প্রতিবেশি বিরুদ্ধে। পৌরসভাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়ার দীর্ঘ দিনেও মেলেনি কোন সুরাহা। প্রতিবেশীর অত্যাচারের প্রতিকার না পাওয়া এবং অভাব- অনটন কারনে অবশেষে মুসলিম থেকে খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিতের কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ায় প্রতিবন্ধী দুই সন্তানসহ বিধবাকে আশ্রয় দিয়েছেন আরেক প্রতিবেশি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শহরের নতুন বাবুপাড়া শাপলা ভবন এলাকার বাসিন্দা কাওসারী বেগমের স্বামী সমসের খান ২০০৬ সালের ২৪ জুন দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার স্বমী পেশায় রাজমিস্ত্রি হলেও জীবিত থাকাকালী সময়ে সংসার সুখ সমৃদ্ধিতে ভরপুর ছিল। স্বমীর মৃত্যুর পর বিধবা তার চার ও দুই বছরের ছোট দুই প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সন্তানদের নিয়ে যখন বাঁচার চেষ্টা শুরু করেন তখন শাকিল হোসেন নামের এক প্রতিবেশী সন্তানসহ বিধবাকে বাড়িঘর দখল করতে নানা রকম ফন্দি আটে। বিধবার উপর শুরু করে নানা রকম অত্যাচার। দখল করে নেয় বিধবার বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা। বিধবা রাস্তা উদ্ধারে ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল সৈয়দপুর পৌরসভায় অভিযোগ দায়ের করেন। পৌর পরিষদ গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিলেও আজ অবধি মিলেনি কোন সমাধান। এরই মধ্যে ২০১৯ সালে আগুনে বিধবার বাড়ি ঘর পুড়ে যায়। বিধবা নতুন করে বাড়িঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিলে ওই প্রতিবেশী তাঁর বাড়ির রাস্তা দখল ছেড়ে দেওয়া তো দুরের কথা বাড়ি নির্মানে ভিটেমাটিতে প্রবেশেই বাধা দেয়। পুরো বাড়ি দখল করে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। অভাব অনটনের স্বীকার কাওসারী বেগম ভিটেমাটিহীন হয়ে একসময় নিরুপায় হয়ে প্রতিবন্ধী দুই ছেলেসহ ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলমান থেকে খ্রিষ্টান হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন তার আরেক প্রতিবেশি রেলওয়ে কর্মচারী আসগর আলী ও শিক্ষিকা হাসনা হেনা দম্পতি। আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভরণপোষন সহ প্রতিবন্ধী শিশুসহ বিধবাকে আশ্রয় দেন।
গতকাল শুক্রবার কথা হলে অসহায় বিধবা কাওসারী বেগম জানান ছেলে দুটো বড় হচ্ছে। এভাবে আর কতদিন মানুষের আশ্রয়ে থাকা যায়। বাড়িঘর উদ্ধারে জন প্রতিনিধিসহ প্রসাশনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। আশ্রয়দাতা শিক্ষিকা হাসনা হেনা বলেন, অভাব ও প্রতিবেশী শাকিলের অত্যাচারে কাওসারী বেগম খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহন করার সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি শুনে একজন মুসলমান হিসেবে আমি এবং আমার স্বামী তাদের আশ্রয় ও ভরণ পোষনের ব্যবস্থা নিয়েছি।
এ ব্যাপারে প্রতিবেশী সাকিল হোসেন বলেন ওই বিধবার বাড়ির কোন রাস্তা নেই। এতদিন আমার জায়াগাই ব্যবহার করেছেন তিনি।