তিউনিসিয়া থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে আইওএম’র চাপ
তিউনিসিয়ায় থাকা বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেশে ফেরার জন্য চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএমের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশি অভিবাসীদের প্রতি সংস্থাটির ওই আচরণ প্রকাশ হওয়ার পর অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে।
তিউনিসিয়াভিত্তিক এনজিও ফোরাম তিউনিসিয়েন পুর লেস ড্রয়েটস ইকোনমিপ অ্যাট সোসিয়াপ (এফটিডিইএস) চলতি মাসে এ অভিযোগ দায়ের করে। খবর গার্ডিয়ানের।
অভিবাসীদের অভিযোগ, সাগর থেকে উদ্ধার হওয়ার পর আইওএমের কর্মকর্তা ও কূটনীতিকরা তাদের দেশে ফিরতে চাপ দিয়ে যাচ্ছে।
তারা জানান, জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থাটি তাদের স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে যেতে নথিতে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দিচ্ছে। তাছাড়া তাদের গ্রেফতার হতে হবে বলে ভয় দেখানো হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনীতিকরাও তাদের সতর্ক করে বলেছেন, তারা যদি স্বেচ্ছায় ফিরে না যান, তাহলে অঙ্গ পাচারের শিকার হতে পারেন।
গত মে মাসে ম্যারিডাইব ৬০১ নামের জাহাজ থেকে এ অভিবাসীরা উদ্ধার হন। ইউরোপের দেশগুলো তাদের গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোর পর তারা প্রায় তিন সপ্তাহ সাগরে আটকে থাকেন। সাগরে আটকে থাকার পর তাদের তিউনিসিয়ার জার্জিসে অবতরণের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর রেড ক্রিসেন্টের একটি অভ্যর্থনা কেন্দ্রে তাদের নেওয়া হয়। পরে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিকে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
তবে বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য কোনো চাপ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে আইওএম। তারা দাবি করেছে, সংস্থার পক্ষ থেকে শুধু অভিবাসীদের নথি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিবাসীদের তিউনিসিয়ায় আশ্রয় চাওয়ার অধিকারসহ অন্যান্য বিকল্পের কথা জানানো হয়েছে। উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের অর্ধেকই শিশু।
আইওএমের মুখপাত্র লিওনার্দ ডোয়েল জানান, যেসব অভিবাসী থেকে যেতে চেয়েছেন, তাদের পাসপোর্ট নেই। তিউনিসিয়ায় তাদের পক্ষে পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব নয়। তাই আইওএম কর্মীরা এ পরিস্থিতির ঝুঁকি সম্পর্কে তাদের জানিয়েছেন। অভিবাসীদের সব ধরনের তথ্য জানায় আইওএম, যাতে তারা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
তিউনিসিয়ার দায়িত্বে থাকা ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের এক মুখপাত্র জানান, এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে পারছেন না। তবে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে তিনি অবগত। এটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই।