আন্তর্জাতিকধর্ম

মাদরাসা ও মসজিদের শহরে পরিণত হচ্ছে নিউইয়র্ক!

মসজিদের শহর হিসেবে পরিচিতি রয়েছে বাংলাদেশের ঢাকা ও তুরস্কর ইস্তাম্বুল শহরের। এবার যোগ হলো আমেরিকার নিউইয়র্কের শহর বাফেলো। এ শহরটিতে দিন দিন মাদরাসা ও মসজিদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলের আদলেই মাদরাসা-মসজিদের শহরে পরিণত হচ্ছে নিউ ইয়র্কের বাফেলো শহর। সেখানের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অধিকাংশ গির্জায় রয়েছে নামাজের ব্যবস্থা। প্রতিদিনই এ সব গির্জায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ছে মুসলিমরা। আর তাতে মুসল্লিদের সমাগম বাড়ছে।

বাফেলো শহরের প্রতিটি মুসলিম পরিবারই তাদের স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে মসজিদে নামাজ আদায়ে সামিল হচ্ছেন। আর প্রতি শুক্রবারে নারীরাসহ পরিবারের অধিকাংশরাই নামাজে যাচ্ছে এসব মসজিদে।

নিউজিল্যান্ড ঘটনার পর থেকে শুক্রবার প্রত্যেক মসজিদে বাফেলোর মেয়র এবং সিটির পুলিশ কমিশনার রেগুলার পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারীও বৃদ্ধি করেছে। যাতে মুসল্লিদের উপর অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা না ঘটে।

২ হাজার ৫২৫ বর্গ কিলোমিটারের এ শহরটিতে বর্তমানে ১৭টি জামে মসজিদ রয়েছে। ৪টি ইবাদত খানাসহ বৃহৎ পরিসরে ৪টি উচ্চ শিক্ষার মাদরাসাও রয়েছে। এ ছাড়াও কুরআন হেফজের লক্ষ্যে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি হেফজখানা।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বাফেলোর পুরাতন পুরো জেলখানাটিই এখন যুক্তরাষ্ট্রের সর্ব বৃহৎ আবাসিক/ অনাবাসিক মহিলা মাদরাসায় পরিণত হয়েছে। যেখানে ইসলামি শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি দেশটির শিক্ষা কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত সিলেবাসও পড়ানো হয়। মাদরাসাটির অধিকাংশ শিক্ষক ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেছেন।

পুরো বাফেলো জুড়েই বসবাস করছে এশিয়ার অধিকাংশ মুসলিম দেশের মানুষ। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ, বার্মা, পাকিস্তান ও ইয়েমেনর মুসলিমদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। আরও আছে সৌদি আরব, আরব আমিরাত ও ভারতের মুসলিম জনসংখ্যাও।

উল্লেখ্য যে, শহরটিতে বর্তমানে যে সব মসজিদ রয়েছে তার অধিকাংশই আগে গির্জা ছিল। এ সব গির্জা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় এবং দেখ-ভালের অভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে বছরের পর বছর। যাতে ক্ষতির মুখে পতিত হচ্ছিল ভবনগুলো। পাশাপাশি বাফেলো সিটি হারাচ্ছিল মোটা অংকের রাজস্ব। অন্যদিকে, বাফেলোতে মুসলিম জনগোষ্টীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়া এবং তাদের চাহিদা থাকায় সিটি কর্তৃপক্ষ নামেমাত্র থাকা এ সব গির্জাগুলো লিজ প্রদান করে মসজিদের জন্য।

সম্প্রতি দেলেবান ও বেলী রোড়ের কর্ণারে সববৃহৎ গির্জাটি যখন মসজিদের জন্য সিটির কাছ থেকে লিজ নেয়া হলো, তখন বিভিন্ন মিডিয়া বিশেষ করে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকদের একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে তা প্রকাশ করে। যাতে তাদের অধিকাংশের মতামত ছিল এরকম যে, ‘আমরা আগে রোববারে প্রার্থনা করতাম, সেখানে মুসলিম ফ্রেন্ডরা শুক্রবারে প্রার্থনা করবে। পার্থক্য শুধু এটাই। আমরা গড’কে ডাকতাম আর ওরা আল্লাহকে ডাকবে। এতে সমস্যা কোথায়?

শহরটির যে সব গির্জা এখন মসজিদে পরিণত হয়েছে তারমধ্যে অন্যতম হলো-
মসজিদ-এ-জাকারিয়া, মসজিদ আল তাকওয়া, মসজিদে জুমা, মসজিদে নোমান, মার্কাস মসজিদ, মসজিদ আল ইয়ামা, মসজিদ জামা, মসজিদ আল নূর, মসজিদ আল গুদাম, মসজিদ এট জ্যাফরীয়া, বায়তুল মামুর জামে মসজিদ, মসজিদ বিলাল, মসজিদ দারুস সালাম, মসজিদ-ই-মাহদি, মসজিদ তাওহীদ, মসজিদ মুকাররাম জামে মসজিদ, সেন্ট্রাল পার্ক জামে মসজিদ উল্লেখযোগ্য।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button