সারাদেশ

বরিশালে চিকিৎসা সেবায় অনন্য ভূমিকা রাখছে “জীবনতরী” ভাসমান হাসপাতাল

শাহ্ মুহাম্মদ সুমন রশিদ,বরিশাল ব্যুরো ॥ বরিশালে চিকিৎসা সেবায় অনন্য ভূমিকা রাখছে ইম্প্যাক্ট ‘জীবনতরী’ ভাসমান হাসপাতাল। স্বাস্থ্যসেবায় ব্যতিক্রমধমী “জীবনতরী” ভাসমান এ হাসপাতালটি স্বরূপকাঠির (নেছারাবাদ) সন্ধ্যা নদীর তীরে ছারছীনা দরবার শরীফের নদীর ঘাটে অবস্থান নিয়ে গত আড়াই মাস ধরে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। দরিদ্র ও অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া ভাসমান এ হাসপাতালের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। ভাসমান এ হাসপাতালে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন সহ পাশ্ববর্তী কাউখালী,নাজিরপুর,ঝালকাঠি সদর এবং বরিশালের বানারীপাড়া,উজিরপুর, আগৈলঝাড়া ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা থেকে রোগীরা এসে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।প্রতিদিন ভাসমান এ হাসপাতালে কয়েক শত রোগী উন্নত চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। গত আড়াই মাসে এ হাসপাতাল থেকে ৭ সহ¯্রাধিক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। মানবসেবায় ব্রতী থাকা “জীবনতরী” নামের ভাসমান হাসপাতালটি ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নামক একটি বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যা পরিহারযোগ্য প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের লক্ষে ১৯৯৩ সাল থেকে নদী পথে দেশজুড়ে কাজ করে আসছে।
ভাসমান হাসপাতালটির প্রশাসক মো. আলাউদ্দিন জানান, এটি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক নিবন্ধনকৃত। ভাসমান এ হাসপাতালটিতে প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের লক্ষে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় তা হলো নদীবাহিত এলাকায় বসবাসকারী সুবিধা-বি ত দরিদ্র রোগীদের স্বল্প খরচে নাক, কান, গলার রোগের চিকিৎসা ও অপারেশন এবং চক্ষু রোগের চিকিৎসা, অপারেশন ও সহায়ক সামগ্রীর ব্যবস্থা, অর্থোপেডিক চিকিৎসা, কৃত্রিম হাত ও পা সংযোজন, ঠোঁটকাটা, তালুকাটা, আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা ও প্লাস্টিক সার্জারীসহ অন্যান্য সেবা দেওয়া হয়। রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স ও প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সও।
এছাড়া এখানে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ধাত্রী প্রশিক্ষণ, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিচালনা করা হয়ে থাকে।

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রতি রোগীর কাছ থেকে ৫০ টাকা ফি নিয়ে সিরিয়ালের মাধ্যমে এমবিবিএস চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। এই সেবায় নিয়োজিত ৪জন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন। রোগের উপর নির্ভর করে তাদেরকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে অপারেশন করাসহ অন্যান্য চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

অপরদিকে সাতদিনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদেরকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। ভাসমান হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষরা আরও জানান, তারা ১৬ জুলাই স্বরূপকাঠিতে এসেছেন। এর আগেও এখানে দু’বার এসে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন এই নিয়ে তৃতীয়বার তাদের আসা। আরও ছয়মাস এখানে থেকে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button