আন্তর্জাতিক

রোমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও বিনম্র শ্রদ্ধায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২০ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে দূতাবাস ভবনের প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী শহিদ মিনারে রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পরপরই প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। রাতের শীত উপেক্ষা করে অনুষ্ঠানে ৫০টিরও বেশি সংগঠনের বহু প্রবাসী বাংলাদেশি স্বতঃস্ফুর্তভাবে এতে অংশগ্রহণ করেন।

দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় একুশের কালজয়ী গান “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি” গাওয়ার মধ্য দিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারির রাত ১১টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। এছাড়া স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত মর্মস্পর্শী দেশাত্ববোধক গানও পরিবেশন করা হয়। এর পর দূতাবাসের কর্মকর্তারা একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন।

রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং ভাষা আন্দোলনে সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। এরপর তিনি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বাঙালি জাতির ও বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় বঙ্গবন্ধু অনবদ্য অবদান রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালে সর্বপ্রথম মাতৃভাষার দাবিতে গঠিত হয় ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ এবং এ আন্দোলনের জন্য তাকে কারাভোগ করতে হয়েছে। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। যেদিন শহিদ হন সালাম, রবকত, রফিক, জব্বার, শফিকসহ নাম না জানা অনেকে।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ তারিখে জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বক্তৃতা দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাভাষাকে বিশ্বদরবারে পরিচয় করিয়ে দেন। ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ভাষা আন্দোলনই ছিল বাঙালির রাজনৈতিক মুক্তি আন্দোলনের সূতিকাগার।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এ বছর আমরা জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষির্কী যথাযথ মর্যাদায় দেশে ও বিদেশে উদযাপন করছি। এ মহান নেতার জীবনাদর্শ ও আমাদের স্বাধীনতার জন্য তার অবদান নতুন প্রজন্ম এবং বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরাই জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের মূল লক্ষ্য।

রাষ্ট্রদূত বিদেশের মাটিতে বাংলা ভাষার চর্চা ও লালন করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের ধন্যবাদ জানান এবং মুজিববর্ষের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ গড়ার কাজে অবদান রাখার আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তি

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button