তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা বাতিল করলেন ট্রাম্প
আফগান যুদ্ধ নিরসনে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় শান্তিচুক্তি বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কাবুলে আত্মঘাতী বোমা হামলায় মার্কিন সেনাসহ ১২ জনকে হত্যার দায় স্বীকার করার পর তালেবান নেতাদের সঙ্গে এই শান্তি আলোচনা বাতিল করা হলো।
রোববার ক্যাম্প ডেভিডে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও তালেবান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিলো ট্রাম্পের। কিন্তু এক টুইট বার্তায় এই হামলার ঘটনায় সেই বৈঠক বাতিল করার কথা জানান তিনি।
টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “তালেবানদের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা করা হবে না। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই শান্তি বৈঠক চলাকালে তারা যদি একটি অস্ত্রবিরতিতে রাজি না হয় আর ১২ জন নিরপরাধ লোককে হত্যা করে, তাহলে তারা সম্ভবত একটি তাৎপর্যপূর্ণ চুক্তির আলোচনা করার ক্ষমতা রাখে না।”
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন সময় এই ঘোষণা দিলেন যখন আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ মার্কিন প্রতিনিধি জালমাই খালিলযাদ গত সোমবার জানিয়েছিলেন, তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুমোদন দিলেই তা স্বাক্ষরিত হবে।
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তালেবানের সঙ্গে খালিলযাদ নয় দফা বৈঠক করে ওই সমঝোতার খসড়া চূড়ান্ত করেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের এই ঘোষণা প্রস্তাবিত ওই শান্তি চুক্তির ভবিষ্যৎকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তালেবান তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে তারা বিস্মিত হয়ে গেছে, এমনটি মনে হচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
দোহায় খলিলজাদসহ মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তালেবান পক্ষের প্রধান আলোচক মোল্লা আব্দুল গনি বারাদারের আলোচনার বিষয়ে জ্ঞাত এক জ্যেষ্ঠ তালেবান নেতা ট্রাম্পের টুইটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে জানিয়েছিলেন, চুক্তিটি স্বাক্ষরের বিষয়ে সমঝোতা প্রায় হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
প্রস্তাবিত ওই চুক্তি অনুযায়ী, ২০ সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫,৪০০ সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল।
তালেবান যোদ্ধারা ২০০১ সালের পর থেকে যেকোনো সময়ের চেয়ে এখনই আফগানিস্তানের সবচেয়ে বেশি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। গত সপ্তাহে তারা দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর কুন্দুজ ও পুল-ই খুমরিতে আক্রমণ চালানোর পাশাপাশি রাজধানী কাবুলে বড় ধরনের দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছে।
এগুলোর মধ্যে বৃহস্পতিবার কাবুলের আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে মার্কিন সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট ফাস্ট ক্লাশ অ্যালেস এ. ব্যারেটো ওটিজও আছেন। তাকে নিয়ে চলতি বছর আফগানিস্তানে নিহত মার্কিন সেনার সংখ্যা ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে আফগানিস্তানে প্রায় ১৪ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে।