সারাদেশ

পদ্মায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ৬

পদ্মানদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় আরো একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে রাজশাহীর পদ্মায় নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো তিনজনে।

এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরো ছয়জন। নিখোঁজদের খুঁজতে পদ্মায় শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে আবারো উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন বিজিবি সদস্যরা।

এর আগে শুক্রবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ঘটনার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়। পরে মধ্যরাতে উদ্ধার অভিযানের সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।

শনিবার সকাল থেকে মোট তিনটি ইউনিট আবার উদ্ধার অভিযানে নামে। এরমধ্যে রাজশাহীর চারঘাটের ইউসুফপুর সীমান্তে পদ্মানদী থেকে বোরকা পরা অবস্থায় মধ্যবয়সী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে বিজিবির টহল দল। তবে এখনো তার পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।

বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়া উদ্দিন মাহমুদ জানান, শুক্রবার রাত থেকেই বিজিবি সদস্যরা নিখোঁজদের উদ্ধারে ঘটনাস্থল থেকে শুরু করে রাজশাহী চারঘাট সীমান্ত পর্যন্ত স্পিডবোট নিয়ে টহল পরিচালনা করছেন। নিখোঁজদের উদ্ধারে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে তাদের প্রচেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। চারঘাটের ইউসুফপুর সীমান্তের পদ্মানদী থেকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় মাঝবয়সী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য শহরের দিকে নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও জানান ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক।

এদিকে শনিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকেই এখলাস নামক ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বাড়ি পবা উপজেলার কাঠালবাড়িয়া গ্রামে।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বরাতে পবা ইউএনও শাহাদাত হোসেন জানান, শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় প্রায় ২৪ জন নিখোঁজ ছিলেন। তবে রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্নভাবে বেঁচে ফিরেছেন আরো ১৭ জন। তাই এখন প্রায় ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন।

ঘটনার পর উদ্ধারদের মধ্যে ছয়জন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া ঘটনার পর উদ্ধারদের মধ্যে হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত শিশুর মরদেহ এখন তার মহানগরীর বসুয়ার নিজ বাসায় নেয়া হয়েছে।

এছাড়া রামেক হাসপাতালে নেয়া হয় খাদিমুল ইসলাম, রতন আলী ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন, সুমন আলী ও তার স্ত্রী নাসরিন বেগম এবং মেয়ে সুমনা আক্তার ও নৌকার মাঝি খাদিমুলকে।

আর রতন ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন জীবিত উদ্ধার হলেও তাদের ছয় বছরের মেয়ে মরিয়ম খাতুনকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে তাকে উদ্ধার করা হয়। আর মেয়েকে নিয়ে নদীতে সাঁতরে উঠেছিলেন সুমন-নাসরিন দম্পতি।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের উপ-পরিচালক আবদুর রশীদ জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে আবারো উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। রাজশাহী, রংপুর ও বিআইডব্লিউটির তিনটি ইউনিট যৌথভাবে পদ্মায় উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। এরমধ্যে রাজশাহী ও রংপুর ফায়ার সার্ভিস এবং বিআইডব্লিউটির পাঁচ সদস্যের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে রয়েছে। সকাল পর্যন্ত বিজিবি সদস্যরা অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছেন।

এর আগে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানায়, পদ্মানদীতে বিয়ে বাড়ির দুটি নৌকা ডুবে যায়। দুই নৌকায় প্রায় ৩৬ জন যাত্রী ছিলেন। ঘটনার পর উদ্ধার করা হয়েছে ১৪ জনকে। এরমধ্যে রামেক হাসপাতালে নেয়ার পর মরিয়ম খাতুন নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। রাত পর্যন্ত নিখোঁজ ছিলেন প্রায় ২৪ জন। তবে শনিবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্নভাবে বেঁচে ফিরেছে আরো ১৭ জন।

এ ঘটনায় প্রায় ছয়জন নিখোঁজ রয়েছে। তারা শুক্রবার সন্ধ্যায় বরের বাড়িতে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান শেষে নতুন বউ নিয়ে ফিরছিলেন। ফিরোনি অনুষ্ঠানের জন্য বর-কনেসহ কনে পক্ষের লোকজন নদীর ওপারে চরখিদিরপুর থেকে ওপারে থাকা পবা উপজেলার ডাঙেরহাটে ফেরার পথে মহানগরীর রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর এলাকার বিপরীতে থাকা মাঝ নদীতে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button