দুর্যোগসারাদেশ

ছিনিয়ে নেওয়া মাছ ভাগাভাগি : ৪ পুলিশ ক্লোজড

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় ইলিশ মাছ শিকারি জেলেদের কাছ থেকে উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের এক সদস্য, চারজন পুলিশ ও কয়েকজন সাংবাদিক মাছ ছিনিয়ে নিয়ে নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজন এসআই ও তিনজন কনস্টেবলকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্স-এ ক্লোজড করা হয়েছে।

জানা গেছে, রবিবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ওই ব্যক্তিরা জেলেদের নৌকায় হানা দিয়ে আনুমানিক দেড় মণ ইলিশ মাছ লুট করেন। পরে উপজেলার গোপালপুর ঘাটে এসে মাছগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন তারা। এ সময় তারা জেলেদের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনা আনুমানিক দুই হাজার মিটার জাল গোপালঘাটের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রিও করে যান।

এ ঘটনার সঙ্গে চরভদ্রাসন উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্রে সহকারী শামীম আরেফিন, চরভদ্রাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান ও তিন কনস্টেবল কুতুবউদ্দিন, ফরহাদ হোসেন ও সেলিম মিয়া এবং চরভদ্রাসন উপজেলার সাংবাদিক লিয়াকত আলী লাবলু, উজ্জ্বল হোসেন এবং উজ্জলের সহযোগী মো. কামাল হোসেন জড়িত বলে অভিযোগে জানা যায়।

গোপালপুর ঘাট মালিকের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী মৃধা জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঘাটে এসে মৎস্য অফিসের লোক, পুলিশ ও সাংবাদিকরা মাছ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়ে যান।

চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন সুলতানা জানান, সোমবার সকালে মৎস্য কার্যালয়ের লোক, পুলিশ ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মাছ চুরির খবর তিনি জানতে পেরেছেন।

তিনি জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যতীত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হতে পারে না। অসৎ উদ্দেশ্যেই ওই ব্যক্তিগণ যে সেখানে গিয়েছিলেন তা বলা যায়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মালিক তানভীর হোসেন বলেন, উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারী শামীম আরেফিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

চরভদ্রাসন প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মেজবাহ উদ্দিন বলেন, যে সকল সাংবাদিক মাছ চুরি করতে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে লিয়াকত আলী লাবলু, ও উজ্জ্বল হোসেন তার ক্লাবের সদস্য। ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশীদ জানান, আসামি ধরার কথা বলে স্পিড বোট ভাড়া করে পদ্মায় গিয়েছিলেন এক এসআই ও তিন কনস্টেবল। কিন্তু মৎস্য অফিসের লোকের পাল্লায় পড়ে তারা নিজেদের দায়িত্ব ভুলে গিয়ে মাছ চুরিতে সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, এসআই মিজানুর রহমান ও তিন কনস্টেবল চর ভদ্রাসন থানা থেকে প্রত্যাহার করে ফরিদপুর পুলিশ লাইন্স-এ ক্লোজড করা হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button