সামান্য একটি মুঠোফোনের জন্য ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হলো কিশোর সোহেল রানাকে। ঘাতক একাই ধারালো চাকু দিয়ে রানার দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে তার মুঠোফোন নিয়ে চম্পট দেয়। কিন্তু এতেই শেষ নয়। পুলিশ যখন লাশ উদ্ধারে তৎপর তখন ঘাতক উৎসুক জনতার সঙ্গে সেখানে হাজির হয়। এ সময় তার আচরণ অন্যদের চেয়ে সন্দেহজনক হওয়ায় হাতেনাতে ঘাতক ফরহাদ হোসেন খলুকে আটক করে পুলিশ।
আলোচিত এবং চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও ইউনিয়েনে তেয়ারিখোলা গ্রামে। গতকাল সোমবার বিকেলে।
গতকাল সোমবার বিকেলে দেহ উদ্ধারের পর এবার পুকুরের কচুরিপানার স্তূপে পাওয়া গেল হতভাগা সেই কিশোর সোহেল রানার বিচ্ছিন্ন মাথা। ঘাতকের দেখিয়ে দেওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে গ্রামের একটি পুকুরে এই মাথার সন্ধান পান পুলিশসহ স্থানীয়রা। এর আগে গতকাল সোমবার বিকেলে একই পুকুর থেকে সোহেল রানার মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সামান্য একটি মুঠোফোনের জন্য একই এলাকার যুবক ফরহাদ হোসেন খলু সোহেল রানাকে গলা কেটে হত্যা করে।
তেয়ারিখোলা গ্রামের ব্যাটারিচালিত অটোরিক্শাচালক জমির হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (১৭) গত রবিবার রাতে পাশের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে যায়। এরপর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত সে নিখোঁজ ছিল। বিকেলে মামা আবুল কালামের নতুন বাড়ির পুকুরে কিশোর সোহেল রানার মাথাবিহীন লাশ ভেসে ওঠে। স্বজন এবং স্থানীয়রা এই সংবাদ পুলিশকে জানালে মতলব দক্ষিণ থানার ওসি স্বপন কুমার আইচ এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে।
মঙ্গলবার দুপুরে ওসি স্বপন কুমার আইচ জানান, গতকাল সোমবার রাত থেকে পুলিশ স্থানীয় এবং গ্রেপ্তার ফরহাদ হোসেন খলু (২০) কে নিয়ে বিচ্ছিন্ন মাথার সন্ধানে অভিযান চালায়। পরে যেখানে দেহ পাওয়া যায়, তার সামান্য দূরে কচুরিপানার স্তূপের ওপর বিচ্ছিন্ন মাথার সন্ধান মেলে। ওসি আরো জানান, সামান্য একটি মুঠোফোনের জন্য খলু সোহেল রানাকে গলা কেটে হত্যা করে। এতে ব্যবহৃত ধারালো চাকু জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্ত খলু তেয়ারিখোলো গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে।
এদিকে, সোহেল রানার মৃত্যুর ঘটনায় তার বড়ভাই সোহাগ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। অন্যদিকে, গ্রেপ্তার ফরহাদ হোসেন খলুকে দুপুরে চাঁদপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ সময় বিচারক কাজী মহসিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।