জাতীয়

চৌকিদার-দফাদাররাও পাবেন ১০ টাকা কেজির চাল

হতদরিদ্রদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (দশ টাকা কেজি চাল) আওতায় আসছেন চৌকিদার-দফাদাররাও (গ্রামপুলিশ)। এখন থেকে সারা দেশের ৪ হাজার ৫৫৪টি ইউনিয়নের ৪৫ হাজার ৫৪০ জন গ্রামপুলিশ প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে ১০ টাকা কেজির চাল পাবেন।

পাশাপাশি এ কর্মসূচির মেয়াদ বছরে ৫ মাস থেকে বাড়িয়ে ৭ মাস করা হতে পারে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) বৈঠকে আজ উপস্থাপন করা হবে। কমিটির সম্মতি মিললেই সারা দেশের গ্রামপুলিশরাও এ সুবিধা পাবেন। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কমিটির সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ ৮ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবরা।

এছাড়া খাদ্য অধিদফতরসহ খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকবেন। কমিটির সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বুধবার বলেন, দেশের হতদরিদ্রদের ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সময় আরও ২ মাস বাড়ানো হচ্ছে। এমনকি গ্রামপুলিশদের (চৌকিদার-দফাদার) খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় আনার চিন্তা-ভাবনা চলছে। এসব চূড়ান্ত হবে আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) মিটিংয়ে।’

শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণে ‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতি কেজি চালের দাম ধরা হয় ১০ টাকা।

সে অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পল্লী অঞ্চলের কর্মাভাবকালীন মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর- এই পাঁচ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

আরও ২ মাস বাড়লে মোট ৭ মাস এ সহায়তা পাবেন হতদরিদ্ররা। তবে কোন দু’মাস বাড়ানো হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে এফপিএমসির বৈঠকে। বৈঠকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মেয়াদ ও সুফলভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি আসন্ন আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, গতবারের মতো এবারও আমন চালের দাম ৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে। চালের পাশাপাশি ধান বেশি করে কেনার সিদ্ধান্ত হতে পারে। এছাড়া আমন সংগ্রহের দিনক্ষণও নির্ধারণ করা হবে বৈঠকে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চৌকিদার-দফাদাররা যুক্ত হলে কর্মসূচির সুফলভোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৫০ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪০টি পরিবার। সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন গ্রামপুলিশরা।

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানী ইউনিয়নের মহল্লাদার (চৌকিদার) শাহার আলী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রীসহ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা প্রতি মাসে সাড়ে ৬ হাজার টাকা বেতন পাই। দফাদাররা ৭ হাজার টাকা পান। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দিয়ে নিজ নিজ এলাকার তথ্য দিলে সেখান থেকে জনপ্রতি ৩০০ টাকা করে দেয়া হয়। এটাই আমাদের সর্বসাকুল্যে আয়। দেরিতে হলেও সরকার আমাদের দিকে নজর দিয়েছে এজন্য আল্লাহর দরবারে লাখো শুকুর।’

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button