আন্তর্জাতিক

চীন-দ. কোরিয়ায় বিদেশফেরতদের মাধ্যমে দ্বিতীয় দফায় ছড়াচ্ছে করোনা

বাইরে থেকে দেশে প্রবেশ করা মানুষের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন এবং সিঙ্গাপুরের মত এশিয়ান দেশগুলোয় দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে।

প্রথম প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়া চীনে জানুয়ারির পর থেকে মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো অভ্যন্তরীণভাবে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

তবে সম্প্রতি চীনে ফিরে এসেছেন এমন মানুষদের মধ্যে ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার তথ্য জানিয়েছে চীন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় মঙ্গলবার নতুন সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫২ জনে। তবে এদের মধ্যে কতজন ভাইরাস বিদেশ থেকে বহন করে নিয়ে এসেছেন, তা পরিস্কার নয়।

দেগু’র একটি নার্সিং হোমে ৭৪ জন রোগীর মধ্যে ভাইরাস শনাক্ত করা গেছে।

বুধবার সিঙ্গাপুর নতুন ৪৭ জনের মধ্যে সংক্রমণের তথ্য জানায়- যাদের মধ্যে ৩৩ জনের দেহে বাইরে থেকে ভাইরাস এসেছে। ওই ৩৩ জনের মধ্যে ৩০ জনই বিদেশে সংক্রমিত হওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করেন।

চীনে আরো আটজনের মৃত্যু হয়েছে যার সবগুলোই হুবেই প্রদেশে এবং অধিকাংশই উহান শহরে।

এই তিনটি দেশই অভ্যন্তরীণ সংক্রমণের ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছে। তবে বিশ্বের অন্য জায়গায় ভাইরাস প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের দেশেও প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে, এমন আশঙ্কা করছে তারা।

বর্তমানে প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়ে মূল আশঙ্কা তৈরি হলেও এশিয়ার দেশগুলোতে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার ঘটনায় বোঝা যায় যে এখানে প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

মালয়েশিয়ার সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বুধবার মানুষকে অনুরোধ করেন যেন তারা ‘ঘরে থাকেন এবং নিজের ও নিজের পরিবারের সুরক্ষা’ নিশ্চিত করেন।

মালয়েশিয়ায় ৭১০ জনের মধ্যে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যাদের অনেকেই ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী কুয়ালালামপুরে  তাবলিগের একটি আন্তর্জাতিক জমায়েত থেকে সংক্রমিত হয়েছেন।

মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাসচিব নূর হিশাম আবদুল্লাহ ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, “আমরা যদি ‘কি আসে যায়’ মানসিকতা পোষণ করি এবং তৃতীয় দফায় ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, তাহলে সুনামির চেয়ে বড় দুর্যোগ শুরু হতে পারে।”

সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত দুই লাখের বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে, যার মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশিই ইউরোপে ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যার অনেকাংশই এশিয়ার মধ্যে পড়ে।

এখন পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়া যেভাবে মহামারি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে তা যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে।

সংক্রমণের উৎস খুঁজে বের করা, বহু মানুষকে একসাথে পরীক্ষা করা এবং আক্রান্তদের দ্রুত আলাদা করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।

এ মাসের শুরুতে প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতি চূড়ান্ত খারাপ অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থার তুলনায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা কমছিল। বুধবার এই সংখ্যা বাড়ার আগের চারদিন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমছিল।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সন্তুষ্টির কোনো সুযোগ নেই।

মানুষের কাছে তারা অনুরোধ করছেন যেন গির্জা, নার্সিং হোম বা ইন্টারনেট ক্যাফের মত জমায়েতে যাওয়া থেকে বিরত থাকেন।

হাঙ্গেরিতে এক ফেন্সিং প্রতিযোগিতা থেকে ফেরার পর তিনজনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে। ঐ ফেন্সিং টিমের ২৬ জন অ্যাথলিট এবং কোচকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। বিবিসি।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button