রংপুর বিভাগসারাদেশ

রমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট বন্ধ, ১৮ রোগীর মৃত্যু

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস বিভাগটি ২০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ডায়ালাইসিস না করতে পেরে ১৮ জন রোগী মারা গেছেন। কিডনি জটিলতার শত শত রোগী ডায়ালাইসিস করতে না পেরে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া হৃদরোগ বিভাগের এনজিওগ্রাম মেশিনটি দেড় বছরের বেশি সময় ধরে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওই বিভাগের ৩টি ইকোমেশিনের সবগুলোই নষ্ট। হৃদরোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে শুধু ইসিজি নির্ভর।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডায়ালাইসিসের পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট এবং বেশ কয়েকটি ডায়ালাইসিস মেশিন বিকল হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র ছয় লাখ টাকা খরচ করলে দুটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট বসানো সম্ভব। অথচ ডায়ালাইসিস বিভাগ থেকে প্রতি মাসে আয় হয় তিন লাখ টাকারও বেশি। মঙ্গলবার দুপুরে কিডনি বিভাগের ডায়ালাইসিস বিভাগে গিয়ে দেখা গেছে, সবগুলো বেড রোগীশূন্য। চার-পাঁচ জন নার্স, আয়া ও টেকনিশিয়ান বসে রয়েছেন। অন্য সময় ৪০ থেকে ৫০ জন কিডনি রোগী চিকিৎসাধীন থাকতো।

হাসপাতাল সূত্র জানান, চলতি মাসের ৮ এপ্রিল থেকে ডায়ালাইসিস ইউনিটটি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ডায়ালাইসিসের প্রধান উপাদান পিউরিফাইড পানি, যা মেশিনের সাহায্যে পরিশোধন করা হয়। সেই মেশিন দুটি পুরোপুরি বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে। তবে এই মেশিন সচল করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে হাসপাতালের সূত্র। ওই বিভাগের একজন নার্স জানান, গত ২০ দিনে ১৮ জন রোগী মারা গেছেন। তারা সবাই এখানকার তালিকাভুক্ত রোগী ছিলেন।

এদিকে হৃদরোগ বিভাগের এনজিও গ্রাম মেশিনটি দেড় বছরের বেশি সময় ধরে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওই বিভাগের ৩টি ইকো মেশিনের সবগুলোই নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। হৃদরোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে শুধু ইসিজি নির্ভর। এনজিও গ্রাম ও ইকোমেশিন না থাকায় হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যা চিহ্নিত করতে পারছেনা রোগীরা। ফলে অনেক রোগী মৃত্যুবরণও করেছেন বলে এমনও অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালের সিটিস্ক্যান মেশিনটিও দীর্ঘদিন থেকে অকেজ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে রোগীদের সিটিস্ক্যান বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। রোগ নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ এমআরআই মেশিনটি নষ্ট। ফলে রোগীদের এমআরআই পরীক্ষা অন্য কোন ডায়াগনেস্টিক সেন্টার থেকে করাতে হচ্ছে।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেয়াজুল করিম জানান, বেশ কিছুদিন কিডনি ডায়ালাইসিস বন্ধ রয়েছে। ডায়ালাইসিস মেশিন ঠিক করার জন্য স্বাস্থ্যবিভাগে ইঞ্জিনিয়ারের চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ নাগাদ ইঞ্জিনিয়ার এসে নষ্ট মেশিন ঠিক করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এনজিওগ্রাম ও ইকো মিশন অপাতত ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে তিনি জানান।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button