বগুড়ার শেরপুরে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ ও পঞ্চমশ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে চকলেট খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চোমরপাথালিয়া গ্রামের আশরাফ আলীর স্ত্রী মোছা. ডালিম বেগম বাদি হয়ে গত মঙ্গলবার (১৩অক্টোবর) রাতে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই রাতেই মামলায় অভিযুক্ত ধর্ষক মো. রজিব সেখকে (৩৬) ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ। একপর্যায়ে জয়লা বটতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি একই গ্রামের মো বাবলু মিয়ার ছেলে।
এদিকে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামে পঞ্চমশ্রেণীর আরেক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে প্রতিবেশি বেল্লাল হোসেন নামের এক লম্পট। টিনের দরজা কেটে ও ভেঙে ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়। এসময় এই ছাত্রীর চিৎকারে ঘরে থাকা ছোট দুই ভাই-বোন ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং ওই লম্পটের লুঙ্গি টেনে ধরে চিৎকার করতে থাকে। পরে লুঙ্গি ফেলেই পালিয়ে যায় লম্পট বেল্লাল হোসেন। গত মঙ্গলবার (১৩অক্টোবর) দিনগত রাত অনুমান দশটার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা ওই গ্রামের মো. আব্দুল মোমিন সেখ বাদি হয়ে গত বুধবার (১৪অক্টোবর) দুপুরের দিকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর লম্পট বেল্লাল হোসেনকেও (৩৫) আটক করা হয়।
বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) মো. গাজিউর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, বিগত ১০অক্টোবর বেলা অনুমান সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চোমরপাথালিয়া গ্রামে দশ বছরের এই ক্ষুদে শিক্ষার্থীসহ বেশকয়েকজন শিশু স্থানীয় একটি জলাশয়ে বড়শি দিয়ে মাছ ধরছিল। এসময় লম্পট রজিব সেখ শিশুটিকে চকলেট খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে পাশের ফসলি মাঠের ধানক্ষেতে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তার জামা-কাপড় খুলে। এসময় শিশুটি চিৎকারের চেষ্টা করলে তার গলায় ধারালো চাকু ঠেকিয়ে জবাই করে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে লম্পট রজিব সেখ। এরপর শিশুটি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বাড়িতে যায় এবং তার মাকে ঘটনাটি খুলে বলে। এরইমধ্যে শিশুটির রক্তপাত শুরু হয় এবং প্রচ- জ¦র আসে। এরপর স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালানো হয়। তবে পুলিশ খবর পেয়ে ওই শিশু ছাত্রী ও তার মাকে থানায় এনে ধর্ষণ মামলা নেন। পাশাপাশি ধর্ষককেও গ্রেফতার করেন। গতকাল বুধবার ধর্ষণের শিকার শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর সাতদিনের রিমা- চেয়ে গ্রেফতারকৃত রজিব সেখকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এদিকে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের সাহাপাড়া গ্রামের আব্দুল মোমিন ও তার স্ত্রী ঘটনার দিন সকালে তিন সন্তান বাড়িতে রেখে সিরাজগঞ্জ জেলা সদরে শ^শুরবাড়িতে যান। ওইদিন আর বাড়ি ফেরেননি। আর এই সুযোগে প্রতিবেশি মনু মিয়ার ছেলে লম্পট বেল্লাল হোসেন টিনের বেড়া কেটে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। এমনকি পঞ্চম শ্রেণীতে পড়–য়া ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে ঘটনাটি জানার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভবানীপুর বাজার এলাকা থেকে অভিযুক্ত বেল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার করে। উক্ত ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।