মমতাকে ফোন, ঘরে ফিরলেন ছেলে-বউয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বৃদ্ধ দম্পতি
কিছুদিন আগেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি চাল করেছেন ‘দিদিকে বলো’। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নম্বরে ফোন করে নিজের অভিযোগের কথা জানাতে পারছেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা।
দিদিকে বলো’র নম্বরে শিক্ষক ছেলে এবং ছেলের বৌয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় পাঁচ মাস আগে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া বৃদ্ধ বাবা-মা ফোন করেন। অবশ্য বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পর মেয়েদের সহযোগিতায় আইনের দ্বারস্থ হয়েও ফল মেলেনি। বাড়িঘর ছেড়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তারা। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া দম্পতি কোনো উপায় না দেখে ‘দিদিকে বলো’র নম্বরে ফোন করে তাদের অসহায়ত্বের কথা জানান।
মমতা ব্যানার্জির কাছে সমস্যার কথা বলতেই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার চুঁচুড়া থানা পুলিশ ওই দম্পতিকে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
জানা গেছে, চুঁচুড়া বুনোকালীতলার বাসিন্দা অজিত ঘোষ ও শ্যামলী ঘোষ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডানলপ কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী অজিত ঘোষের দুই মেয়ে, এক ছেলে। অনেক আগেই দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে জয়ন্ত ঘোষকে পড়াশোনা শিখিয়েছেন সাধ্যমতো।
ছেলে এখন পেশায় শিক্ষক। অভিযোগ উঠেছে, বাবা-মায়ের স্নেহ কাজে লাগিয়ে বাড়িঘর লিখিয়ে নেন জয়ন্ত। সম্পত্তি হাতানোর পর থেকেই শিক্ষক ছেলে টানা চার বছর ধরে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ওপর অত্যাচার করছিলেন। মাস পাঁচেক আগে অত্যাচার সীমা ছাড়িয়ে যায়।
গত মার্চে বৃদ্ধ দম্পতিকে বেধড়ক মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। বাবা-মায়ের ওপর ভাইয়ের অত্যাচারের খবর পেয়ে দম্পতির দুই মেয়ে চুঁচুড়ার বাসিন্দা ঝর্না সরখেল ও বেহালার বাসিন্দা রত্না ধর বাবা-মাকে রাখছিলেন নিজেদের কাছে।
গতকাল চুঁচুড়া থানার পুলিশকর্মীরা ওই দম্পতিকে বুনো কালীতলার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পর বৃদ্ধা শ্যামলী ঘোষ বলেন, ছেলের চরম অত্যাচার সহ্য করেছি। তবে আর ভয় পাই না।
বাবা মা নিজেদের ঘর ফিরে পাওয়ায় খুশি মেয়েরা। তবে জয়ন্ত বলেন, আমি কোনো দোষই করিনি।