অর্থনীতি

সরল সুদহার ও সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নের পথে ব্যাংকিং খাত

অবশেষে বহুল প্রত্যাশিত ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট ও সরল সুদ চালুর বাধা কাটল। আরো আগে থেকেই এটি কার্যকর করার কথা থাকলেও নানা কারণে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। ঋণ পুনঃতপশিলিকরণ সংক্রান্ত সর্বশেষ নির্দেশনা উচ্চ আদালতে বহাল থাকায় ব্যাংকিং খাতে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তা এখন বাস্তবায়নের পথে। দেশের শিল্পায়নের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া উদ্যোগ বাস্তবায়নে আর কোনো বাধা থাকল না। এখন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত উপকৃত হবে। উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে এগিয়ে আসার অনুপ্রেরণা পাবেন। তাতে বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ।

সুদের হার কমিয়ে আনতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বেশকিছু সুবিধাও দেওয়া হয়েছে। তবু গড়িমসি করেছিল ব্যাংকগুলো। অথচ ঐসব ব্যাংকে নানা অনিয়ম, যোগসাজশ করে ঋণ প্রদান ও টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মসাতের ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে। এসব অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ কমিটি গঠনেরও নির্দেশনা এসেছে উচ্চ আদালত থেকে। মূলত খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে দুই শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতপশিলিকরণ সংক্রান্ত নির্দেশনা চ্যালেঞ্জ করা হয় উচ্চ আদালতে। ফলে, আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকে সরকার। এর আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল একান্ত সাক্ষাত্কারে বলেছেন, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের পর এক মাসের মধ্যেই সিঙ্গেল ডিজিট ও সরল সুদহার কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হবে। উচ্চ আদালতও রবিবার ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। ফলে এখন সরল সুদ ও সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নের পথ সুগম হলো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা এবং এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে ‘নিয়ন্ত্রণহীন’ ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। একই সঙ্গে সিঙ্গেল ডিজিট ও সরল সুদহার বাস্তবায়ন দেশে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণেও সক্ষম হবে।

সরকারের এই উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করবে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী-অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন মহলও।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, বড়ো ঋণখেলাপিদের তুলনায় ছোটোরা বেশি সমস্যায় ভোগেন। জ্বালানি সংকটসহ নানা কারণে তারা ধরাশায়ী হন। সরল সুদ চালু হলে এ ধরনের উদ্যোক্তারা উত্সাহিত হবেন। তারমতে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলো সচল হলে কর্মসংস্থানও বাড়বে। এ সুযোগ দেশে উদ্যোক্তা বিকাশে বড়ো ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।

এসএমই ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলি জামান বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি সরল সুদ। এটি বাস্তবায়ন দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে নতুন বিপ্লব সৃষ্টি করবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button