পরীমণিকাণ্ডে কলকাতার টলিপাড়াতেও উদ্বেগ
বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই কলকাতার ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রি টলিপাড়ায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে উৎকণ্ঠা। চাপা একটা আতঙ্ক এখন টলিপাড়ার অন্দরে। কেউ কোনোভাবে পরীমণিকাণ্ডে আন্তর্জাতিক জালে ফেঁসে যাবেন না তো? প্রশ্নটা চাপা স্বরে হলেও ছড়িয়ে পড়েছে টলিপাড়ায়।
সূত্রের খবর, বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রীর সঙ্গে টলিপাড়ার প্রায় ১১ জন পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনেতাদের সুস্পম্পর্ক ছিলো বলে জানা গেছে। যার মধ্যে কলকাতার গণমাধ্যম সূত্র জানায়, টলিগঞ্জের ২ জন পরিচালক, ৩ জন প্রযোজক ও ২ জন অভিনেতার নাম উঠে এসেছে। যাদের সঙ্গে মূলত পরীমণির লিঙ্ক মিলেছে বলে খবরে প্রকাশ। তবে সেই লিঙ্ক তার সঙ্গে স্রেফ অভিনয় জগতের সঙ্গে সম্পর্কিত নাকি সেই লিঙ্কের সঙ্গে অন্য বিষয় জড়িয়ে আছে, তা নিয়ে এখন নানা গুঞ্জন।
বাংলাদেশের গোয়েন্দারা যতই পরীমণিকে নিয়ে তদন্তের জাল গোটাচ্ছেন, ততোই একটা চাপা ভয় কলকাতার টলিপাড়ায় অল্প বিস্তর হলেও ছড়িয়ে পড়ছে। টলিপাড়ার কেউ পরীমণির ক্লায়েন্ট লিস্টে ছিল কী না- তা নিয়ে চাপা আতঙ্ক এখন শহর কলকাতাতেও। বিষয়টি নিয়ে কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না।
জানা গেছে, বাংলাদেশের সুপারহিট নায়িকা পরীমণি পশ্চিমবঙ্গে এসে গত চার বছর ধরে একাধিক সিনেমা করেছেন। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের যৌথ প্রযোজনায় পরীমণির দুটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে পশ্চিমবাংলায়।
বাংলাদেশের জ্যাজ মাল্টমিডিয়া ও টলিগঞ্জের এস কে মুভিজের যৌথ প্রযোজনায় ২০১৬ সালে ‘রক্ত’ সিনেমায় নায়িকার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিলো পরীমণিকে। এরপর ২০১৮ সালে এস কে মুভিজ আর বেঙ্গল ক্রিয়েশনের প্রযোজনায় ‘স্বপ্নজাল’ নামে সিনেমাতেও ছিলেন বাংলাদেশের এই হট নায়িকা। এই ছবির পরিবেশনার দায়িত্বে কলকাতার একটি নামকরা সংস্থা ছিলো। ফলে কলকাতার টলিউডের সঙ্গে তার যে যোগাযোগ ছিলো তা স্পষ্ট। আর এখানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের গোয়ান্দাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পরীমণির কাছ থেকে যতোই তথ্য বের হচ্ছে, ততোই চাপা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে কলকাতার টলিপাড়ার অন্দরেও।
অনেকেই আশঙ্কায় ভুগছেন, স্রেফ পরীমণির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দায়ে কেউ ফেঁসে যাবেন না তো? এদিকে পরীমণির বাসা থেকে মদ ও মাদকসহ অন্যান্য নিষিদ্ধ সামগ্রী উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় কলকাতার যোগ রয়েছে কী না- তা নিয়েও একটা ভয় ধরতে শুরু করেছে টলিপাড়ার একটি মহলে।
বিষয়টি নিয়ে টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা চিরঞ্জিত বলেন, বিষয়টির সঙ্গে টলিপাড়ার কেউ জড়িত রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে আমার মনে হয় না। তবে এই ধরনের ক্ষেত্রে যখন কেউ ডেসপারেট হয়ে ওঠে, তখন এই ধরনের ঘটনা ঘটা অসম্ভব কিছু নয়।
পরীমণি প্রসঙ্গে চিরঞ্জিত বলেন, ওর এক্স হাজব্যান্ডের মন্তব্যটা আমার কাছে অবাক লেগেছিল। তিনিও ভাবতে পারেননি, পরীমণি এমন করতে পারেন। তবে সময় ও প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে অনেক সময় অনেক কিছুই ঘটে যায়। আর সেক্ষেত্রে কেউ অভিনেতা বা অভিনেত্রী বলে পার পেয়ে যাবে সেটা হতে পারে না। আইন সবার ক্ষেত্রেই সমান।