বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

স্মার্টফোনে ভালো পারফরম্যান্স পেতে চাইলে

কিছুদিন ব্যবহার করার পর নতুন স্মার্টফোনেরও গতি কমতে থাকে। তবে বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে রোধ করা যায় এই গতি হ্রাস। জানাচ্ছেন রিয়াদ আরিফিন

স্মার্টফোন কেনার সময় করণীয়
স্মার্টফোন কেনার সময় নিজের কাজের ধরন বুঝে প্রয়োজনমাফিক কনফিগারেশনের স্মার্টফোন নির্বাচন করতে হবে। যাঁরা স্মার্টফোনে খুব ভারী মানের কাজ করেন কিংবা হাই-গ্রাফিকস গেম খেলতে চান, তাঁদের অবশ্যই ভালো মানের প্রসেসর ও বেশি র‌্যাম-সংবলিত ফোন কেনা উচিত। বাজারে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৮ গিগাবাইট পর্যন্ত র‌্যামের স্মার্টফোন পাওয়া যায়। তবে চলনসই পারফরম্যান্স পেতে অ্যানড্রয়েড স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ২ গিগাবাইট র‌্যামের নিচে স্মার্টফোন এড়িয়ে চলাই ভালো। আবার যাঁরা স্মার্টফোন দিয়ে ফটোগ্রাফি করতে চান, তাঁদের ফোন কিনতে হবে ভালো মানের ক্যামেরা দেখে। এ ছাড়া ভালো ব্যাকআপ পেতে কেনার আগে অবশ্যই ভালো সক্ষমতার ব্যাটারির বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।

অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে করণীয়
অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয় অনেক অ্যাপই ফোনে ইনস্টল করে থাকি। মাত্রাতিরিক্ত অ্যাপ ইনস্টল করার ফলে স্মার্টফোনের গতি কমে যেতে পারে। তাই অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ কাজ শেষে ফোন থেকে আন-ইনস্টল করে ফেলতে হবে। এ ছাড়া অ্যাপ ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে সব সময় অনুমোদিত প্ল্যাটফর্ম (গুগল প্লেস্টোর, অ্যাপলের অ্যাপস্টোর) ব্যবহার করতে হবে।

ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ ও ডাটা
স্মার্টফোনে এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে, যেগুলো আমরা না চাইলেও ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে। এসব ফোনের র‌্যাম ব্যবহার করে এবং ফোনের গতি কমিয়ে দেয়। তাই এ ধরনের থার্ড পার্টি অ্যাপ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে ফোনের সেটিংস থেকে ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস সীমাবদ্ধ করে দেওয়া যেতে পারে।

ফোনের স্টোরেজ ফাঁকা রাখা
স্মার্টফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ যতটা সম্ভব ফাঁকা রাখার চেষ্টা করতে হবে। স্টোরেজ ভরে গেলে তা ফোনের গতি কমের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ছাড়া ব্রাউজার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও চ্যাটিং অ্যাপসহ অন্য থার্ড পার্টি অ্যাপগুলো অনেক ডাটা ও ক্যাশ ফাইল জমা করে। তাই সময়-সুযোগ পেলেই এই অ্যাপগুলোর জমানো ফাইল মুছে ফেলতে হবে। ফোনের অ্যাপ সেটিংসে অপশনটি পাওয়া যাবে। আর ফোনে অতিরিক্ত মেমোরি কার্ড ব্যবহার করলে তা অবশ্যই ভালো মানের হতে হবে। সস্তা ও মানহীন মেমোরি কার্ড ব্যবহারে ফোনের গতি কমে যায়।

অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপ হালনাগাদ রাখা
স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেমকে সর্বশেষ সংস্করণে হালনাগাদ রাখতে হবে। স্মার্টফোন নির্মাতা থেকে প্রাপ্ত নিরাপত্তা আপডেট থেকে শুরু করে অন্য সব ধরনের আপডেট যথাসময়ে ইনস্টল করে নিতে হবে। অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার স্মার্টফোনের গতি হ্রাস হওয়া থেকে বাঁচাবে। এ ছাড়া ফোনে ইনস্টল করা অ্যাপগুলোকেও আপডেট রাখা বাঞ্ছনীয়।

ব্যাটারির যত্ন
ব্যাটারি স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষঙ্গ। তবে ব্যাটারির জন্য আলাদা করে যত্ন না নিলে খুব কম সময়েই এটির কার্যক্ষমতা কমে যায়।

স্মার্টফোনের উজ্জ্বলতা যতটা সম্ভব কমিয়ে ব্যবহার করতে হবে।

প্রয়োজন ছাড়া ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই, এনএফসি ইত্যাদি চালু রাখা যাবে না।

অধিক পরিমাণে ব্যাটারি ব্যবহার করে এমন থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার হতে বিরত থাকতে হবে।

ব্যাটারির চার্জ ৪০% থেকে ৮০%-এর মধ্যবর্তী থাকাকালীন স্মার্টফোন সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স দেয়। এ ছাড়া একটানা ভারী কাজ কিংবা হাই-গ্রাফিকসের গেম খেলতে স্মার্টফোনের ব্যাটারির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম হতে পারে। ফলে স্মার্টফোন ধীরগতির হয়ে যায় বা হ্যাং হয়ে যায়। তাই এ ধরনের কাজের মাঝে বিরতি দিতে হবে।

ফোন খুব বেশি ধীরগতির হলে করণীয়
অনেক সময় ম্যালওয়্যারের সংক্রমণ কিংবা থার্ড পার্টির অ্যাপের কারণে স্মার্টফোন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ধীরগতির হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ফোনটির ‘ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট’ করার মাধ্যমে গতি আবার বাড়ানো যায়। ফ্যাক্টরি রিসেট করার অপশন ফোনের সেটিংসেই পাওয়া যাবে। এই প্রক্রিয়ায় অবশ্য ফোনে রক্ষিত সব তথ্যই মুছে যায়। তাই এটি করার আগে ফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফাইল অন্যত্র কপি করে রাখতে হবে। এ ছাড়া রিসেট দেওয়ার আগে ফোনে লগইন থাকা অ্যাকাউন্টগুলো (গুগল অ্যাকাউন্ট, অ্যাপল আইডি, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি) লগ-আউট করে নিতে হবে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button