আগামীকাল সৈয়দপুর সরকারি কলেজে আসছে তদন্ত টিম
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: সদ্য ঘোষিত সৈয়দপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের আর্থিকসহ নানা অনিয়মের ঘটনা তদন্তে করবে সরকারের অডিট বিভাগ। কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত হবে এ তদন্ত। অনেকে বলেছেন, এতে থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়বে, কিভাবে তিলে তিলে জমানো লাখ লাখ টাকা নয় ছয় করা হয়েছে।
শিক্ষা বিভাগের একটি সূত্র জানায়, রোববার (১৪ মার্চ) অডিট টিমটি ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি লাখ লাখ টাকা কিভাবে ও কি নিয়মে ব্যয় করা হয়েছে তা দেখবে। অডিট টিমটি ইতোমধ্যে অধ্যক্ষকে তাদের আগমনের কথা জানিয়েছেন। অভিযোগ মতে, এ খবর জানার পর থেকে পাশের দিনাজপুর সরকারি কলেজের একজন দক্ষ একাউটেন্টকে হায়ারে নিয়ে এসে তৈরি করা হচ্ছে নতুন নতুন ভাউচার এবং ঠিক করা হচ্ছে কাগজপত্র। এ কাজ করা হচ্ছে গত প্রায় ৪/৫ দিন থেকে। অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান সরকারের নির্দেশে ওই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক কলেজের কমলমতী শিক্ষার্থীদের দিয়ে তার পক্ষে এবং কারও বিপক্ষে মিছিল মিটিং করানোর একটি উদ্যোগ নেন। কিন্তু তারাও (শিক্ষার্থী) চায়, অভিযোগগুলো সুষ্ঠুভাবে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তদন্তে জানা যাবে নবাগত এ অধ্যক্ষ আসার পর কিভাবে এবং কোন উদ্দেশ্যে কাড়ি কাড়ি টাকা ব্যাংক থেকে একক স্বাক্ষরে তুলে ব্যয় করলেন।
এদিকে কেন এবং কোন চিঠির বলে নবাগত এ অধ্যক্ষ ব্যাংক থেকে সহজে টাকা তুলতে পারার উদ্দশ্যে সৈয়দপুর সোনালী ব্যাংক থেকে এ্যাকাউন্ট নিয়ে যান রুপালী ব্যাংকে? সরকারের নির্দেশনা আছে, সদ্য সরকারি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি আত্বীকরণ না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে হবে। কলেজ সরকারি হলেও এ কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি এখনও আত্বীয়করণ না হলেও সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।
সূত্র বলছে, অনেকগুলো অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পিছনের (ব্যাক ডেটে) তারিখে দুই বছরের ৪টি ঈদ বোনাস উত্তোলন, সরকারিকরণের গেজেট ঘোষণার পর নিয়োগকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের বকেয়ার বেতন-ভাতা প্রদান, উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে ভর্তির হতে সরকারি এ কলেজে সেশন চার্জসহ সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা নেওয়ার স্থলে প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা ভর্তি ফি নেওয়া হয়, সাড়ে চার ফুট উঁচু ও প্রায় ৭২ ফুট দীর্ঘ সীমানা প্রাচীর নির্মাণে কয়েক হাজার ইট এবং ইস্টিমিটের প্রায় দ্বি-গুণ পরিমাণ সিমেন্ট ও বালু ব্যয় দেখানো, অধ্যক্ষ অফিসের ভাল টেবিলটি বদলিয়ে প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন টেবিল ক্রয় এবং দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড এ কলেজের একজন শিক্ষককে দুর্নীতির দায়ে আজীবনের (জীবিত থাকা পর্যন্ত) জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করলেও অধ্যক্ষ তাকে দিয়েই কলেজের শিক্ষাসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা। কলেজের প্রশাসনিক বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাসহ অভিভাবকবৃন্দ জানান, তারা যাবেন এসব অনিয়মের সাক্ষ্য দিতে এবং তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হবে। তারা ইতিমধ্যে তদন্তকারী টিমের সাথে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানান।
এসব ব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান সরকার জানান, এসব অভিযোগ সঠিক নয়। গত মার্চে এ কলেজে এসে সবই নিয়ম মাফিক কিছু করা হয়েছে ।