এবার ঈদে আবারও মাঠে শেরপুরের সুলতান
শেরপুরের নালিতাবাড়ীর সুলতান এলাকায় জনপ্রিয় গত বছর থেকেই। তবে আশা অনুযায়ী দাম না পেয়ে একে বিক্রি করেননি মালিক রুহুল আমীন। অপেক্ষা করেছেন পরের ঈদের। এই এক বছরে সুলতানের ওজন আরও বেড়েছে। তাই দামও বেড়ে গেছে তার।
নালিতাবাড়ীর রানিগাঁও এলাকার গরু খামারী রুহুল জানান, দুটি অস্ট্রেলিয়ান গাভী দিয়ে তিনি শুরু করেন মিনি খামার। সাড়ে তিন বছর আগে একটি গাভী বাছুরের জন্ম দেয়। ধীরে ধীরে সেই বাছুর বড় হয়। স্বাস্থ্যেও যেমন, দেখতেও তেমন। তাই আদর করে নাম রেখেছেন শেরপুরের সুলতান। একা সামলানো যায় না তাকে। ছয় থেকে আটজন মিলে সুলতানকে খামার থেকে বের করতে হয়। তাই তাকে খুব বেশি বাইরে বের করেন না।
রুহুল জানান, গত বছর করোনার কারণে সুলতানকে বাজারে তুলতে পারেননি। খামারে এসেই অনেকে দরদাম করেছে। সর্বোচ্চ দাম বলা হয়েছিল ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন ১৫ লাখ। সে কারণে বিক্রি করেননি। সুলতানের এখন ওজন প্রায় ১ হাজার ৭০০ কেজি। দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ লাখ।
কিন্তু এ বছরও সুলতানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন রুহুল। শেরপুরে এত দামের গরুর ক্রেতা নেই। ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে তাকে। কিন্তু কীভাবে নিয়ে যাবেন? কোথায় রাখবেন? করোনায় এবারও কি সুলতান অবিক্রিত থেকে যাবে? খড়, ঘাস বাদে সুলতানকে প্রতিদিন অন্তত ১০ কেজি করে খৈল, ভুষি, ভাতের মাড়, খুদি খাওয়াতে হয়।
রুহুল বলেন, ‘আমি তো গরিব মানুষ। সুলতানেরে আর তো খাওন দিবার পাইতাছি না। বাড়ি থাইকা সুলতানরে বেচবার পাইলে ঢাকার দামের চেয়ে ২/১ লাখ টাকা কমে হলেও বেচব।’ সুলতানকে নিয়ে উৎসাহী গ্রামের অন্যরাও। প্রায়ই অনেকে দেখতে আসেন এমন বিশালাকার গরু।
রানীগাঁওয়ের মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমাগো খুব ভালো লাগে যে এমন গরু আমাগো গ্রামে আছে। কত মানুষ দেখবার আইতাছে।’
কলেজছাত্র হৃদয় বলেন, ‘শেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় আর দামি গরুটা এখন আমাদের গ্রামের। এটা আমাদের অহঙ্কার। আমারও ইচ্ছা হচ্ছে এমন একটি গরু পালার।’
এ বিষয়ে জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল হাই জানান, তারা অনলাইন প্লাটফর্ম করেছেন যাতে সুলতানের মতো ভালো গরুসহ সব ধরনের গরু সহজে বিক্রি করা যায়। সুলতান বিক্রির জন্য সব ধরনের সহায়তা ও পরামর্শ দিতে তারা প্রসÍুত।