সুন্দরবনে মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন ক্ষতিকর নয়!
সুন্দরবনসহ এর আশেপাশের এলাকা ও জেলায় মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে যে রেডিয়েশন (বিকিরণ) নির্গত হয়, তা ক্ষতিকর কিনা পরীক্ষা করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি। বিটিআরসি বলেছে, সংশ্লিষ্ট এলাকার মোবাইল টাওয়ার থেকে নির্গত রেডিয়েশনের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মানেরও নিচে। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। এমনকি স্বাস্থ্যহানীর কোনও আশঙ্কা নেই।
সুন্দরবন দেশের সংরক্ষিত বন। ১৯৮৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা দেয়। মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন সেখানকার প্রাণ ও প্রতিবেশের কোনও ক্ষতি করছে কিনা,সেটা পরীক্ষা করা ছিল জরুরি। বিটিআরসি’র দাবি, পরীক্ষার সেই ফল ইতিবাচক এসেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সুন্দরবন এলাকার রেডিয়েশনের মাত্রা সুন্দরবনের প্রাণ প্রতিবেশের জন্য কোনও হুমকি নয়।
জানা গেছে, বিটিআরসি গত জুলাই ও আগস্ট মাসে খুলনা বিভাগে মোবাইল ফোনের টাওয়ার থেকে নিঃসৃত ইএমএফ (ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড) রেডিয়েশন পরীক্ষা করেছে। পরীক্ষাটি ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন-আয়োনিইজিং রেডিয়েশন প্রটেকশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) মানদণ্ড অনুসরণ করে করা হয়েছে। সংস্থাটি পরীক্ষালব্ধ তথ্য-উপাত্তের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখতে পেয়েছে— ওইসব জায়গায় ইএমএফ রেডিয়েশনের মান গ্রহণযোগ্য মানের চেয়ে অনেক কম হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন-আয়োনিইজিং রেডিয়েশন প্রটেকশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) মান অনুযায়ী যা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়।
গত ২৯ অক্টোবর বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং ও অপারেশন বিভাগের সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষরিত ওই ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে— বিটিআরসির অনুসন্ধান ও পরিমাপে সুন্দরবন এলাকায় মোবাইল টাওয়ার স্থাপনে ক্ষতিকর কোনও প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি।
জানা যায়, খুলনা বিভাগের খুলনা শহর, যশোর জেলা সদর ও বাগেরহাটের সুন্দরবন এলাকায় (মোংলার বোদ্দামারী, জয়মনি) পরিবীক্ষণ চালায় বিটিআরসি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের হাতে যতগুলো টেস্টের রিপোর্ট আছে সেগুলোতে রেডিয়েশনের মাত্রা আদর্শ মানের চেয়েও কম। ফলে এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘কিছু লোক গুজব ছড়াচ্ছে, বাড়ির ছাদে টাওয়ার থাকলে ক্যানসার হয়। এটা সম্পূর্ণ গুজব। এটার কোনও সত্যতা এখনও পাওয়া যায়নি। বরং লোকে যেসব মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, সেগুলো থেকে টাওয়ারের চেয়ে বেশি রেডিয়েশন নির্গত হয়।’