জাতীয়

মানবিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই : চট্টগ্রামে তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। ৭০ লাখের বেশি মানুষ। বইমেলার অভাব ছিলো। বিক্ষিপ্ত বইমেলা হতো। চসিক সম্মিলিত বইমেলা আয়োজন করেছে। যান্ত্রিকতার যুগ চলছে। মঙ্গলে মনুষ্যবিহীন যান পাঠাচ্ছে। সামনে রোবট পাঠাবে। প্রযুক্তির উৎকর্ষের পাশাপাশি মানুষ যন্ত্রে রূপান্তরিত হচ্ছে। আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। মানুষ যাতে মানুষ থাকে, মানবিক গুণাবলি অক্ষুন্ন সে জন্য বইয়ের বিকল্প নেই। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম চত্বরে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, অনেক অভিভাবক বই না দিয়ে সন্তানকে স্মার্ট ফোন তুলে দেন। স্মার্ট ফ্যামিলি দেখানোর জন্য ১২ বছরের সন্তানের হাতেও স্মার্ট ফোন তুলে দিচ্ছে। আজকের পৃথিবীর বাস্তবতায় মানবিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই।

৪ হাজার বছর আগে মানুষের সঙ্গে প্রাণীর লড়াই হতো। জিতলে বীর আখ্যা পেতো। আজ মানুষ বুদ্ধিমত্তায় অন্য প্রাণী থেকে এগিয়েছে। কারণ মানুষ যা আবিষ্কার করে তা লিপিবদ্ধ করতে জানে, ডকুমেন্টেড করতে জানে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম উৎকর্ষের মাধ্যমে আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছি।

তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সাল নাগাদ এমন রাষ্ট্র গড়তে চাই যা অন্যরা অনুকরণ করবে। মন্ত্রী স্কুলশিক্ষার্থীদের বইমেলায় নিয়ে আসার ও পুরস্কৃত করার আহ্বান জানান।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশ আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে পারতো গত ১১ বছরে যদি নেতিবাচক রাজনীতি না থাকতো। গতকাল দেখতে পেলাম বিএনপির পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্রদূত-কূটনীতিকদের সঙ্গে বসে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তাদের কাছে নালিশ উপস্থাপন করেছে। ভোট দিলো বাংলাদেশের মানুষ। ভোট হলো ঢাকা শহরে। যদি কোনো নালিশ থাকে তাহলে ঢাকা শহরের ভোটারদের কাছে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে নালিশ দিতে হবে। কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে এই যে ধন্না দেওয়া এতে দেশ এবং জাতিকে অপমান করা হয়। তারা ক্রমাগতভাবে যেকোনো বিষয়ে বিদেশিদের কাছে যে ছুটে যায় এটি এটি দেশ, জাতি এবং ঢাকা শহরের ভোটারদের অপমান করার শামিল। অন্য কোনো কিছু নয়। যদি বিএনপির কোনো নালিশ থাকে তবে সেই নালিশ দেবে নির্বাচন কমিশনে। সেই নালিশ দেওয়ার জন্য তারা আদালতে যেতে পারে, জনগণের কাছে, ভোটারদের কাছে যেতে পারে।

সেটি না করে তারা বিদেশি দূতাবাসের কূটনীতিকদের ডেকে নালিশ উপস্থাপন করা এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি দূতাবাস বা রাষ্ট্রগুলো যাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে সেটির পথ তৈরি করে দেওয়া। এটি কখনো আমাদের জন্য সম্মানজনক নয়, এটি আমাদের জন্য অসম্মানজনক। যে কাজটি ক্রমাগতভাবে বিএনপি করছে। বিএনপিকে আমি অনুরোধ জানাবো, আপনাদের যদি কোনো নালিশ থাকে সেটি জনগণের কাছে উপস্থাপন করুন, নালিশ থাকলে নির্বাচন কমিশনে উপস্থাপন করুন। প্রয়োজনে আদালতে যান। দয়া করে বারংবার বিদেশিদের কাছে আমাদের ঘরের বিষয় নিয়ে নানা ধরনের নালিশ উপস্থাপন করে দেশ ও জাতিকে বিদেশিদের কাছে খাটো করবেন না।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো সম্মিলিতভাবে বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পাঠক সমাজ এ আয়োজনকে কাজে লাগিয়ে তাদের পছন্দ মত বই কিনে তাদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করতে পারবেন।

স্বাগত বক্তব্যে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা বলেন, গত বছরের চেয়ে কলেবর বেড়েছে এবারের বইমেলার। আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান জিমনেসিয়ামে নিয়ে আসা হয়েছে। এতে ৬০টি স্টল বৃদ্ধি করা গেছে।বই হচ্ছে ভালো বন্ধু- তাই মা, বাবা, শিশু-কিশোর সবাইকে বইমেলায় আসতে হবে।

সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো সামসুদ্দোহা, শিক্ষা স্বাস্থ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি নাজমুল হক ডিউক, চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ সভাপতি শাহ আলম নিপু প্রমুখ।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Back to top button