রাজনীতিলিড নিউজ

জাতীয় শোক দিবস আজ

১৯৭৫ সালের এদিন অতিপ্রত্যুষে ঘটেছিল ইতিহাসের সেই কলঙ্কজনক ঘটনা। মহাদেব সাহা তার ‘সেই দিনটি কেমন ছিলো’ কবিতায় লিখেছেন  ‘সেদিন কেমন ছিলো  ১৫ই আগস্টের সেই ভোর/ সেই রাত্রির বুকচেরা আমাদের প্রথম সকাল/ সেদিন কিছুই ঠিক এমন ছিলো না/ সেই প্রত্যুষের সূর্যোদয় গিয়েছিলো/ সহস্র যুগের কালো অন্ধকারে ঢেকে/ কোটি কোটি চন্দ্রভুক অমাবস্যা তাকে গ্রাস করেছিলো/ রাত্রির চেয়েও অন্ধকার ছিলো সেই অভিশপ্ত দিন।’
আজ বাংলার আকাশ-বাতাস আর প্রকৃতিরও অশ্রুসিক্ত হওয়ার দিন। এদিনে আগস্ট আর শ্রাবণ মিলেমিশে একাকার হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর রক্ত আর আকাশের মর্মছেঁড়া অশ্রুর প্লাবনে। বঙ্গবন্ধুকে বুলেটের বৃষ্টিতে ঘাতকরা যখন ঝাঁজরা করে দিয়েছিল, তখন যে বৃষ্টি ঝরছিল, তা যেন ছিল প্রকৃতিরই অশ্রুপাত।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালরাতে ঘাতকদের হাতে নিহত হন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯ জন। ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের বাসভবনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হলেও সেদিন দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। সে সময় স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে জার্মানিতে সন্তানসহ অবস্থান করছিলেন শেখ হাসিনা। শেখ রেহানাও ছিলেন বড় বোনের সঙ্গে।
দীর্ঘ আইনি পথ পেরিয়ে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি পাঁচ আত্মস্বীকৃত খুনির ফাঁসি হয়। পরে ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল ভারতে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর আরও একজন খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। বাকি খুনিরা দেশের বাইরে পলাতক থাকায় তাদের সাজা কার্যকর করা যাচ্ছে না।
কর্মসূচি : দেশে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। বনানী কবরস্থানে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ধানমন্ডি ও বনানীর শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেবেন।
টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। এ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে দেশের সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদফতর ও সংস্থা জাতীয় শোক দিবসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্ব স্ব কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে তথা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

আরো দেখুন

সম্পর্কিত প্রবন্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button